রোগীর বাড়িতে ডাক্তার পাঠাচ্ছেন মাশরাফি

প্রকাশিত: ৭:০৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২০

রোগীকে ডাক্তার খুঁজতে হবে না। ঘুরতে হবে না হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে। উল্টো ডাক্তারই খুঁজে নিচ্ছেন রোগীর বাড়ি। মাশরাফি বিন মুর্তজার নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তাঁর নির্বাচনী এলাকা নড়াইল ও লোহাগড়া উপজেলায় আজ থেকে শুরু হয়েছে এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা।

করোনাভাইরাস নিয়ে ভয়-আতঙ্কে সবাই। কারও হয়তো সাধারণ সর্দি-কাশি বা জ্বর হয়েছে, মনে মনে শঙ্কা- ‘আমাকে করোনাভাইরাসে ধরেনি তো!’ গ্রামের মানুষের মধ্যে এর সঙ্গে আছে কুসংস্কার, লোকলজ্জা এবং অসুখ গোপন করার প্রবণতা। যদি ডাক্তারের কাছে গেলেই করোনাভাইরাস বলে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়! মানুষ তো তখন আর গ্রামেই থাকতে দেবে না! আবার অন্য রোগ নিয়ে হাসপাতালে গেলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে। সে জন্য অনেকে অন্য রোগে অসুস্থ হলেও ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন না।

এই সব সমস্যার একটিই সমাধান দেখেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেটি হলো ডাক্তারকেই রোগীর বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া। তাহলে কেউই আর বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না। কেউ অসুস্থ বোধ করলে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা সেবার নম্বরে ফোন করে ঠিকানা দেবেন। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ডাক্তার চলে যাবেন তার বাড়ি। রোগী দেখে প্রয়োজনে কিছু ওষুধও দিয়ে আসবেন তারা।

নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ নিয়ে মাশরাফি প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘সাধারণ সর্দি-কাশি হলেও ভয়ে এখন কেউ হাসপাতালে যাচ্ছে না। আবার অনেকের হয়তো অন্য অসুখ। তারাও করোনার ভয়ে হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে কষ্ট পাচ্ছে। সে জন্যই লোহাগড়া ও নড়াইলে আমরা এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবার উদ্যোগ নিয়েছি।’

ডাক্তাররা বাড়ি বাড়ি ঘুরে যদি কাউকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করেন, তাদের জন্যও টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন মাশরাফি, ‘নড়াইল সরকারি হাসপাতালের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে তার মধ্যেই আমরা ১০ বেডের একটা করোনা সেন্টারের ব্যবস্থা করেছি। সেরকম কোনো রোগী পাওয়া গেলে তাকে এখানে এনে রাখা হবে। তারপর খুলনায় নমুনা পাঠিয়ে টেস্ট করা হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমরা দুই উপজেলা থেকে প্রতিদিন ২ জন করে ৪ জনকে পরীক্ষা করাতে পারব।’

আপাতত নড়াইলের স্থানীয় দুই চিকিৎসককে দিয়ে বাড়ি বাড়ি চিকিৎসা দেওয়ার কাজ করছে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন। তবে মাশরাফি চান, নড়াইলের সন্তানদের মধ্যে যারা চিকিৎসক, তাঁরাও এ কাজে এগিয়ে আসুন। ‘মাত্র দুজন ডাক্তার দিয়ে কাজটা করা কঠিন। আমাদের এলাকার আরও কিছু ডাক্তার যদি এগিয়ে আসতেন, তাহলে আরও বেশি মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া যেত’, বলছিলেন মাশরাফি।

সুত্র: প্রথম আলো