বে টার্মিনাল; থাকবে না বন্দরকেন্দ্রিক যানজট, বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি

প্রকাশিত: ১২:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০১৮

দেশের বাণিজ্যিক নগরী চট্রগামে বে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। সম্ভাব্যতা যাচাই ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর এই দুই দেশ  মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। দুই দেশ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন জমা দিয়েছে বলে সম্প্রতি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তাদের প্রস্তাবনাটি বিবেচনাধীন রয়েছে।

বে টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি বদলে যাবে। একই সাথে বন্দরে কমবে কন্টেইনার যট। সহজে ২৪ ঘন্টাই পণ্য উঠানামা করানো যাবে। এমনকি রাতেও বন্দর কার্যক্রমে সমস্যা হবে না। এই ফাস্ট ট্র্যাক মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবে যে কোনো দেশই।

প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে ব্যয় আরো বাড়বে। চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ  এর বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটিরর কাজ জিটুজি এর ভিত্তিতে হতে পারে আবার বেসরকারীভাবেও হতে পারে বলে জানা যায়। সাগর তীর ঘেঁষে বে-টার্মিনালে ডেলিভারি ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। নির্মাণসহ পুরো প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে ২০২২ সালের মধ্যে।

সরকার ইতিমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন করেছে। বৃহত্তম এ প্রকল্প  নির্মাণ কাজের বিনিয়োগ অংশীদার খুঁজছে সরকার। ইতিমধ্যে থার্ড লাইন অব ক্রেডিটের ভিত্তিতে একটি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ভারত ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল দিয়েছে বলে জানা যায়।

পতেঙ্গা সমুদ্রবন্দরের কাছে ১২০০ একর জায়গাজুড়ে টার্মিনালটির নির্মাণ করার প্রস্তাবনা করা হয়েছে। চট্রগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার নিকটেই পতেঙ্গা। প্রাথমিকভাবে ৯০৭ একর জমি টার্মিনালের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ একর জমির মালিকারা ব্যক্তিগত আর বাকি ৮৩৯ একর জমি সরকারি।

১৫ মিটার মাল্টিপারপোস টার্মিনাল, ১২২৫ মিটার কন্টেইনার টার্মিনাল ও ৮৩০ মিটার কন্টেইনার টার্মিনাল-২ নিমাণের পরিকল্পনা রয়েছে এখানে। এর মধ্যে দুইটি ডলফিন জেটিও থাকবে। এর একটিতে কয়লা আমদানীর কার্যক্রম চলবে অপরটিতে চলবে সিমেন্ট ক্লিংকারের কাজ। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান সক্ষমতার চেয়েও বেশি পণ্য হ্যান্ডলিং যাবে এ টার্মিনালের মাধ্যমে।

বে টার্মিনাল; থাকবে না বন্দরকেন্দ্রিক যানজট, বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি

হালিশহর উপকূল তীর থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে জেগে ওঠা চরের সঙ্গে যে চ্যানেলটি রয়েছে তার গভীরতা ৭ থেকে ১০ মিটার। সাগরের দিকে এর গভীরতা ১২ মিটারেরও বেশি। এই টার্মিনাল দিয়ে ১২ মিটার গভীরতার এবং ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারবে। কর্ণফুলীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান জেটিগুলোতে ৯ দশমিক ৫ মিটার গভীরতা ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বড় কোনো জাহাজ ভিড়তে পারে না।

বে-টার্মিনালটি হবে মূলত কনটেইনার জাহাজনির্ভর জেটি। তবে প্রয়োজন হলে এতে খোলা পণ্যবাহী জাহাজও হ্যান্ডলিং করা যাবে। এছাড়া ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হলে ৫ হাজার ভারি পণ্যবাহী গাড়ি রাখা যাবে। বে-টার্মিনালে ট্রাক টোল রোড দিয়ে যাতায়াত করবে। এতে নগরীতে যানবাহনের চাপ কমবে। থাকবে না বন্দরকেন্দ্রিক যানজট।

সুত্রঃ যুগান্তর