করোনার বিরুদ্ধে আসথ্রাজেনিকার টিকা এক বছর সুরক্ষা দেবে SOHEL SOHEL TALUKDER প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২০ ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘আসথ্রাজেনিকা’র প্রধান নির্বাহী বলেছেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাধীন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ‘এজেডডি১২২২’ এক বছরের জন্য কোনো মানুষকে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। আসথ্রাজেনিকার প্রধান নির্বাহী পাসক্যাল সোরিয়ট গণমধ্যমে দেওয়া সাক্ষাত্কারে এ কথা বলেন। ‘এজেডডি১২২২’ ভ্যাকসিনটি বর্তমানে ১০ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষাধীন। কিন্তু এটির কার্যকারিতা নিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে এখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই পরীক্ষার ফলাফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগস্ট মাস পর্যন্ত। অবশ্য পাসক্যাল সোরিয়টের কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, এই ভ্যাকসিন ব্যবহারকারীরা প্রায় এক বছর পর্যন্ত করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকবে। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছু দেশকে কয়েক কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ক্যামব্রিজভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও নেদারল্যান্ডসকে ৪০ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে শনিবার একটি চুক্তি করেছে। এর আগে আগস্টের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ৪০ কোটি ভ্যাকসিন এবং যুক্তরাজ্যকে ১০ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। এছাড়া সারা বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে আগামী বছর থেকে শতকোটি ভ্যাকসিন দিতেও রাজি রয়েছে আসথ্রাজেনিকা। আসথ্রাজেনিকার এই ভ্যাকসিন পুনরুদ্ধারমূলক ভাইরাস ভ্যাকসিন হিসেবে পরিচিত। গবেষকেরা করোনা ভাইরাসের জিনগত উপাদান অন্য একটি পরিবর্তিত ভাইরাসের মধ্যে সন্নিবেশ করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন। পরিবর্তিত ভাইরাসকে ভেক্টর বা বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিন মানবদেহে এমন একটি রোগ প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, যেটি শরীরের অভ্যন্তরে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে শনাক্ত করবে এবং ধ্বংস করবে। সাধারণ ঠান্ডার জন্য দায়ী এডিনোভাইরাস গোত্রের একটি ভাইরাসের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে দুর্বল করে এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে। এই ভাইরাসের মধ্যেই মূলত করোনা ভাইরাসের জিনগত উপাদানকে সন্নিবেশ করা হয়েছে। যদি এই ভ্যাকসিন কার্যকর প্রমাণিত হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এটি শরীরকে করোনা ভাইরাস ধ্বংসের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে সঙ্গে উত্পাদন কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছি। সবকিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরের মধ্যেই চুক্তিবদ্ধ দেশগুলোকে সরবরাহ করতে পারব। প্রাথমিকভাবে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সি ১৬০ স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষা করে এখন দ্বিতীয় পর্যায় থেকে তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এখন শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সি ১০ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে এটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে কি না। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় এটি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানটি ব্রাজিলে মানুষের ওপর পরীক্ষা করছে। এই মুহূর্তে ব্রাজিলে খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে কোভিড-১৯; যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত দেশ এখন তারা। দেশটিতে অন্তত ২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। কারণ তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। আর বাকি ৮ হাজার ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে ব্রিটেনে। যদি ভ্যাকসিনটি সত্যিই কার্যকর প্রমাণিত হয়, তাহলে সারা বিশ্বের মহামারি নিয়ন্ত্রণে ৪৫০ কোটির মতো ভ্যাকসিন লাগবে। ২০২১ সালের মধ্যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য ১০০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে ইতিমধ্যে ভারতের শিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গেও চুক্তি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই ভ্যাকসিন গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্ট, অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড, টেরেসা লাম্বে, ডক্টর স্যান্ডি ডগলাস ও অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল। সারা গিলবার্টের তৈরি ভ্যাকসিনটির নাম ছিল ‘চ্যাডক্স১’। পরবর্তী সময়ে আসথ্রাজেনিকার সঙ্গে যৌথভাবে নতুন করে ভ্যাকসিনের ডিজাইন করছে অক্সফোর্ড। —ডেইলি মেইল। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: 120x600 #StayHome Sale 2020